কালাগ্নি রুদ্র
প্রায়ই শোনা যায় যে পাখির ধাক্কায় বিমান ভেঙে পড়েছে বা জরুরী অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছে।
প্রশ্ন হলো ২-৫ কেজি ওজনের একটি পাখির কি ১০ লাখ কেজি ওজনের বিমান বিধ্বস্ত করার মতো যথেষ্ট ক্ষমতা আছে?
এর উত্তর হলো- হ্যাঁ !
এমন কি করে হয় ? তাহলে আর একটা প্রশ্ন আসে যে, কয়েক গ্রাম বুলেট কিভাবে এত ক্ষতি করতে পারে?
এর উত্তর হলো- বুলেটের গতিশক্তি ( Kinetic Energy)
যে কোন জিনিসে যত বেশি কাইনেটিক এনার্জি থাকবে সেই জিনিসের ইমপ্যাক্ট ব্লাস্ট ততটাই শক্তিশালী।
কাইনেটিক এনার্জি- বস্তুর ভর এবং গতির উপর নির্ভর করে
গতি যত বেশি- তত বড় বিস্ফোরণ! যেহেতু পাখি বেশিরভাগ বায়ুমণ্ডলে ১০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পাওয়া যায়, তাই বিমানের সাথে পাখির ধাক্কা লাগে বেশিরভাগ টেক-অফ ও ল্যান্ডিংএর সময়। একটি টিপিক্যাল বিমানের স্পীড ২৭৫ কিমি / ঘন্টা, এই গতিতে, যদি সামনে একটি ৫ কেজি ওজনের পাখি চলে আসে, তাহলে ম্যাথামেটিকেলি- সেই পাখির সংঘর্ষেও একই প্রভাব পড়বে, যতটা- ৪৫৫ কেজি ওজনের একটি ভারী পাথর ১০ মিটার উচ্চতা থেকে একটি বিমানে আঘাত করা হলে হবে। কারণ বেশিরভাগ পাখির সাথে বিমানের ধাক্কা লাগে সামনের অংশে থাকা পাইলট কেবিনের স্ক্রিনের সাথে, যার ফলে এই শক্তিশালী বিস্ফোরণে কেবিনের স্ক্রিন ভেঙে যেতে পারে আর যার কারণে বিমানের ভিতরে মেন্টেন এয়ারপ্রেশার লিক হয়ে যায়, এবং জরুরি অবতরণ করতে হয়।
সবচেয়ে বিপজ্জনক মুহূর্ত হলো, কোন পাখি যখন, বিমানের ডানার নিচে ইঞ্জিনের সামনে চলে আসে এবং ইঞ্জিনের ফ্যান তাকে টেনে আনে , এই অবস্থায় পাখিটি, ইঞ্জিনের প্রপেলারগুলোর সাথে ধাক্কা খায় ও সেগুলোকে ড্যামেজ করে দেয় অথবা ইঞ্জিনে আটকে ফ্যানগুলোকে জ্যাম করে দেয়। যার কারণে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় আর বিমান ধ্বংস হয়ে যায়।
মজার ব্যাপার হলো… যদিও বিশ্বের ইতিহাসে পাখির সাথে সংঘর্ষের কারণে বিমান দুর্ঘটনার সংখ্যা এখনও পর্যন্ত নগণ্য কিন্তু তাহলেও আজ পর্যন্ত এই সমস্যার কোন প্রতিকার নেই মানুষের হাতে।