প্রতিকূল এবং অনুকূল পরিবেশে
সদাবাহার ফুলের মতো ক্রমাগত
জন্মানো এইসব কবিতারা
একটি পূর্ণ মানবিক অবয়বে
সেইসব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই
যারা কবিতাকে কেবলমাত্র কালির ছিটে
ভেবে , যেন পিঠের ওপর ছিটিয়ে না দেয় !
বরং যখনই কবিতার একটি শিরা
হাতে আসবে তখন তাকে শুধুমাত্র না পড়ে
আত্মস্থ করবে এবং বুঝতে পারবে যে
এটা যতই সাবলীল ভাবে বোনা হোক
এর ভিতরে একটি গিঁট খুব দক্ষতার
সাথে লুকানো আছে যেখানে
অনেক সমস্যা বা চিরপরিচিত কোন
আর্তনাদ প্রতিধ্বনিত হয় !
এই গিঁটকে স্পর্শ করে মানুষের এই
উপলব্ধি হওয়া উচিৎ যে এই কালি
এতো গাঢ় হলো কি করে !
এই কালি মানুষের চোখের জলের
প্লাজমা হয়ে নিজের তৎকালীন বহমানতাকে
রুদ্ধ করে দিয়ে জীবনের প্রত্যঞ্চায় টান মেরেছে !
কবিতাকে পাথরের মূর্তির মতো
নির্লিপ্ত থাকার প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার
যার বহু চোখের হনন , অঙ্গভঙ্গি ও স্পর্শকে
উপেক্ষা করার দক্ষতা কেবলমাত্র এই জন্য থাকে
কারণ সে তার শেষ ক্রেতাকে খুঁজে ফেরে
সর্বোপরি, কবিতাকেও অনুপ্রবেশকারীর সাথে
মিশে গিয়ে নবজীবন পেতে হয় !
আমাদের কবিতার মুখোমুখি হয়ে নিজেকে
উপস্থাপন করার সাহস দেখাতেই হবে
যাতে সমস্ত বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে
নিজের হাতের তালুতে কবিতার ভ্রূনকে
বারবার বিকশিত করতে পারি !
মিলি
অবস্থান
এই ব্যবস্থার দক্ষ অর্থনীতিবিদ
হওয়ার কারণে ওরা নিয়মটা জানে
যে চাহিদা পূরণ না হলে বাজার
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়
আর আমরা অলৌকিকতা ভালবাসি
আমরা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য
কোন কল্কি অবতারের প্রতিবিম্বকে
সাংবিধানিক পদে স্বতঃস্ফূর্তভাবে খুঁজতে থাকি
ঐতিহাসিক দলিলগুলির গুঢ় অধ্যয়ন থেকে
তারা আশাবাদী হয়ে ওঠে যে
জাতি-ধর্মের রঙিন কাঁচের বাজার
আমাদের মেরুদন্ডে ভালোভাবেই অনুপ্রবেশ করেছে।
তাদের তির্যক হাসি অনুযায়ী
আমরা আমাদের মুলাধর চক্রকে ক্ষয় করতে শুরু করেছি।
যার জন্য তাদের এখন
ভাড়াটে ইঁদুরের খুব বেশি প্রয়োজন হয় না।
কারণ, আমরা সবাই আমাদের নখগুলিকে এতটাই
বাড়তে দিয়েছি যে এখন তারা আঁচড়ানোর অভ্যেস
থেকে সরে এসেছে আর এটাই
আমাদের অসহায়ত্ব ।
বাজারের চাহিদা-পূরণের নিয়মানুসারে
এখন আমরা ‘নাগরিক’ হিসাবে নই
‘গ্রাহক’ এর ভূমিকায় অধিক প্রমাণিত
মিলি
অপেক্ষা
দুনিয়া জুড়ে প্রত্যেকটি সাম্রাজ্যবাদের
একটিই চরিত্র যা বীভৎসতার দাবী রাখে
পাহাড়, মালভূমি, নদীর তীর-সমুদ্রের তীর
সমভূমি জুড়ে মানুষের হাড় ছড়িয়ে রেখে
ইতিহাস জুড়ে হিংসার আধিপত্যবাদ কায়েম রাখা
বিগতের দিকে তাকিয়ে যেন মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে ।
কিন্তু মানুষও স্পার্টাকাসের বংশদ্ভূত কিছুতেই হার মানেনা
কোন প্রতিবন্ধকতায় থামাতে পারেনা তার অদম্যতাকে
মহাদেশ থেকে মহাদেশে যে ঘৃণার আগুণ জ্বলছে তা কোনো সামান্য
আগুণ নয় যে ওরা নিভিয়ে দেবে , এ আগুণ মানুষের ক্ষিদের আগুণ
অত্যাচারের আগুণ , ধর্ষিতা নারীর পোড়া লাশের আগুন , যে লাশগুলো
আজও অপেক্ষায় বাতাস টানে ফুসফুসে , মহেঞ্জোদারো পুকুরের শেষ ধাপে।
মিলি