রাজনীতি বলতে আমরা সাধারণ মানুষ বুঝি তৃণমূল , বিজেপি, কংগ্রেস , সপা , বসপা , এআইডিএমকে , ডিএমকে, আওয়ামিলীগ , বিএনপি , লেবারপার্টি , কনজারভেটিভ পার্টি, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট, এইসব পার্টি যারা সরকার পরিচালনার জন্যে বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্যে ভোট-ব্যবস্থায় সামিল হয় ।
কিন্তু জনসাধারণ এটা কিছুতেই বুঝতে চায় না যে , এই রাজনৈতিক সংগঠনগুলো পুঁজিবাদকে মুচলেকা দিয়ে তবেই সংসদীয় নির্বাচনে অংশগ্রহন করার সুযোগ পায় , প্রচলিত সংবিধানকে মান্যতা না দিলে রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতিই পাবে না কেউ ।
যে রাজনৈতিকদলের এজেন্ডা বা প্রতিশ্রুতি শিল্পপতি-উদ্যোগপতিদের ভরসা যোগাতে পারে সেই স্নেহধন্য পার্টি , নির্বাচনে লড়াই করার আর্থিক এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে ।
২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি, ভারতীয় শিল্পপতিদের গ্রুপ থেকে ১৪,৭১২ কোটি টাকা পায় নির্বাচনি তহবিলে । এছাড়াও সারা ভারতবর্ষের ১০০০টি টিভি চ্যানেল বিজেপি পার্টির বিজ্ঞাপন পায় । বিজেপি পার্টি নয়, নরেন্দ্র মোদীকে খাড়া করে নির্বাচন লড়েছিল হিন্দুত্ববাদী দলগুলো । এছাড়াও ক্রোনী ক্যাপিটালিস্ট বলে তথাকথিত লুম্পেন চরিত্রের পুঁজিপতিরা মোদীর পাশে দাঁড়িয়েছিল । মোদী এ পর্যন্ত ৭৭ বার বিদেশ ভ্রমন করেছে , সঙ্গে থেকেছে নীরব মোদি, মেহুল চোক্সি , বিজয় মাল্যদের দল ।
ভারতবর্ষে এখন এই লুম্পেন ক্রোনী ক্যাপিটালিস্টদের যুগ , ওজনদাঁড়িতে তারা মাপছে রাজনৈতিক সমীকরণের অন্তর্ভুক্ত জোটগুলোকে। সংসদীয় গণতন্ত্র তার জন্মলগ্ন থেকেই পঙ্গু। নির্বাচন পদ্ধতি আগাগোঁড়াই ত্রুটিপুর্ণ । অর্থ,প্রভাব,সিন্ডিকেট,মাস্তানি,নির্বাচন জোচ্চুরি ইত্যাদির মাধ্যমে ক্ষমতায় পৌঁছে দেওয়া হয় পুঁজিপতিদের পছন্দ মত রাজনৈতিক দলগুলিকে।
তাই সংদীয় নির্বাচন মানেই মানুষের কল্যানের নামে মানুষকে ঠকিয়ে রাষ্ট্রের বরাদ্দকৃত অর্থ সংগ্রহ করা এবং মানুষের শ্রম থেকে উদ্বৃত্ত মূল্য শুঁষে নিয়ে পুঁজিপতিদের ঘরে জমা করার একটি সুচারু রাষ্ট্রিক পরিকল্পনা আর এই রাষ্ট্র দেখে আমরা দেশপ্রেমে গদগদ হই , জাতীয়তাবাদের গান গাই , ভিন্ন রাষ্ট্রকে ঘৃণা করি । অর্থাৎ পুঁজিপতিদের অদৃশ্য সুতোর টানে আমরা এই সংসদীয় মঞ্চে নেচে বেড়াই ।
মিলি মুখার্জী